প্রকাশিত: Sat, Nov 11, 2023 11:29 PM
আপডেট: Sun, Jun 29, 2025 8:40 AM

[১] মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরের চ্যানেল উদ্বোধন [২] জনসভায় আবারো নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

সালেহ্ বিপ্লব, আয়াছ রনি:  [৩] মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে এ জনসভায় গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা চাই, এই দেশ আরও সুন্দর হোক, আরও উন্নত হোক। একটা কথা মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়, মানুষের জন্য আমরা কাজ করি। আর অন্য একটি দল আছে এরা মানুষের সম্পদ লুটে খায়, এরা খুন-হত্যা, বোমাবাজি, গ্রেনেড হামলা, চোরাকারবারী, অস্ত্র চোরাকারবারি এইগুলি তারা জানে। মানুষের কল্যাণে তারা কাজ করতে পারে না, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।

[৪] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগামীতে নির্বাচন। সেই নির্বাচনেও আমি আপনাদের কাছে চাইবো যে, আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিন, যেনো আপনাদের সেবা করতে পারি। আর যে কাজগুলি এখনও বাকি, সেই কাজগুলি যেন এসে করতে পারি, তার জন্য আমি আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। আপনারা কি নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন, শেখ হাসিনার এ প্রশ্নের জবাবে জনসভায় উপস্থিত হাজারো মানুষ হাত তুলে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তারা গগনবিদারী কণ্ঠে ‘নৌকা নৌকা’ স্লোগান দিতে থাকেন।

[৫] শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের সেবক। জনগণের জন্যই কাজ করে। আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো সরকার কক্সবাজারের উন্নয়নের দিকে নজর দেয়নি। নৌকায় ভোট দিলেই শুধু দেশের উন্নয়ন হয়। মানুষ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছিল বলেই বাংলাদেশ বদলে গেছে। 

[৬] এর আগে তিনি মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেলের উদ্বোধন ও প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এখন শুরু হবে ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কন্টেইনার জেটি এবং ১৮.৫ মিটার ড্রাফটসহ ৩০০ মিটার দীর্ঘ একটি বহুমুখী জেটি এবং একটি কন্টেইনার ইয়ার্ডসহ বন্দরের অন্যান্য সুবিধার নির্মাণ কাজ। 

[৭] সিপিজিসিবিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে কোম্পানিটি ইতিমধ্যেই মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেলটি সিপিএ চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহেলের কাছে হস্তান্তর করেছে। ২০২৬ সালে বন্দরটির কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

[৮] রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সিপিজিসিবিএল ইতোমধ্যে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের অংশ হিসাবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এই চ্যানেলের মাধ্যমে ১২০টি জাহাজ চলাচলের জন্য চ্যানেল এবং দুটি জেটি নির্মাণ করেছে।

[৯] দেশের প্রথম এবং একমাত্র গভীর সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পটি প্রায় ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে হাতে নেওয়া হয়।

[১০] ২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী মাতারবাড়ী বন্দর নির্মাণের জন্য চ্যানেলের প্রস্থ ১০০ মিটার বাড়িয়ে ৩৫০ মিটার করা হয়েছে।

[১১] প্রধানমন্ত্রী এদিন আরো কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন। প্রকল্পগুলো হলো: বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাটে ৫৯৫ মিটার দীর্ঘ পিসি বক্স গার্ডার ব্রিজ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কুতুবদিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ঠান্ডা চৌকিদারপাড়া ৬০ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ, ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চকরিয়া পৌরসভা বাস টার্মিনাল সম্প্রসারণ প্রকল্প, ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ এ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ) ডিজাইন ও স্থাপনকরণ প্রকল্প, সোয়া ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় কক্সবাজার সদর উপজেলা জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, মহেশখালীতে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে ইউনুসখালী নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে উখিয়ায় রত্না পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে মরিচ্যা পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, ৫১ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মহেশখালীর মাতারবাড়িস্থ ২৬০০ মেগাওয়াট আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র (প্রথম সংশোধিত), ৬৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কুতুবদিয়ায় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে কুতুবদিয়া দ্বীপকে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্তকরণ প্রকল্প, ২৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার বিমান বন্দর উন্নয়ন (প্রথম পর্যায়) (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় ডিপোজিট ওয়ার্ক হিসেবে বাংলাদেশ পানি উন্নয় বোর্ড (বাপাউবো) কর্তৃক ২১২ একর ভূমি ভরাট ৪ দশমিক ৮ কিমি স্লোপ প্রটেকশন বাঁধ নির্মাণ, এপ্রোচ রোডসহ ২টি ব্রিজ ও সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প এবং ২৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে রামুতে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প।

[১২] এছাড়াও তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে টেকনাফে মাল্টিপারপাস ডিজাস্টার রিসিলেন্ট শেল্টার কাম আইসোলেশন সেন্টার নির্মাণ, রামুর জোয়ারিনালা ইউপি-মোহসিনা বাজার ভায়া নন্দাখালী সড়কে সাড়ে ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮৪ মিটার দীর্ঘ আর্চ ও আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প এবং প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে কাব স্কাউটিং সম্প্রসারণ (৪র্থ পর্যায়) প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সম্পাদনা: ইকবাল খান